সোমবার, ৮ই জুলাই ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
২৩শে আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিশ্বের সেরা পাঁচ মসজিদ

ধর্ম ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ১২:৫১ অপরাহ্ন, ১লা আগস্ট ২০২৩

#

সৌদি আরবের মক্কায় অবস্থিত মসজিদ-আল-হারাম- ছবি: সৌদি গ্যাজেট

মসজিদের ক্ষেত্রে ‘সেরা’ নির্বাচন করা সত্যিই খুব কঠিন। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে এত চমৎকার স্থাপত্যশৈলী ও বৃহৎ আয়তনের মসজিদ আছে যে, সেগুলো একটির চেয়ে অন্যটি সেরা মনে হবে। কিন্তু প্রচলিতভাবে আয়তন ও ধারণক্ষমতার ভিত্তিতে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন মসজিদকে গৌরবান্বিত করেছে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। সেই আলোকে আজকের সেরা পাঁচটি মসজিদের কথা রইল পাঠকদের জন্য।


>> মসজিদ-আল-হারাম:

ইসলামিক দুনিয়ার প্রাণ মসজিদ-আল-হারাম। এই মসজিদটিকে সবচেয়ে সম্মানিত হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এই পবিত্র মসজিদকে ঘিরে ইসলামের ইতিহাসে অনেক ঐতিহাসিক ঘটনা আবর্তিত হয়েছে। সে জন্য এই মসজিদ পুরো পৃথিবীর ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের কাছে অত্যন্ত পবিত্র হিসেবে বিবেচিত। সৌদি আরবের মক্কায় অবস্থিত মসজিদ-আল-হারামের আয়তন প্রায় ৩ লাখ ৫৬ হাজার ৮০০ বর্গমিটার। মসজিদটির ধারণক্ষমতা ৪০ লাখ। পবিত্র কাবা বা মুসলিমদের কিবলাকে ঘিরে মসজিদটির অবস্থান।

প্রতিবছর অসংখ্য মুসলিম এখানে হজ ও ওমরাহ পালন করতে আসেন। বিশ্বের এই বৃহৎ মসজিদে আছে অনেক গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ও স্থান, যেমন হাজরে আসওয়াদ, মাকামে ইব্রাহিম, জমজম কূপ এবং সাফা ও মারওয়া পাহাড়। শতাব্দীর পর শতাব্দী বিভিন্ন খলিফা, সুলতান ও রাজার শাসনকালে মসজিদটির অনেক উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ করা হয়।


>> আল-মসজিদ-আন-নববী:

পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম মসজিদ আল-মসজিদ-আন-নববীর অবস্থান মদিনায়। আয়তন ৩ লাখ ৪৮ হাজার বর্গমিটার। আল-মসজিদ-আন-নববীর ধারণক্ষমতা ১৫ লাখ। এই মসজিদ স্থাপিত হয়েছিল ৬২৩ খ্রিষ্টাব্দে। মুহম্মদ (স.) নিজে এর নির্মাণে অংশ নেন। মহানবীর সময়ে মসজিদে নববী মুসলিমদের সম্মিলনের স্থান, আদালত ও মাদ্রাসা হিসেবে ব্যবহৃত হতো। আরব উপদ্বীপের মাঝে এখানে প্রথম বৈদ্যুতিক বাতি জ্বালানো হয়েছিল। এখানে মুহম্মদ (স.)-এর রাওজা মোবারক অবস্থিত। এ ছাড়া হজরত আয়েশা (আ.) যে বাড়িটিতে থাকতেন, তার ওপর একটি সবুজ গম্বুজ নির্মিত হয়েছে, সেটিও মসজিদে নববীর অংশ। এই মসজিদের ইতিহাস ও তাৎপর্যকে সম্মান করে হাজিরা প্রতি বছর হজ করার আগে বা পরে যেকোনো এক সময়ে মদিনায় অবস্থান করেন।


>> গ্র্যান্ড জামে মসজিদ:

বৃহত্তম মসজিদের তালিকায় তৃতীয় নামটি হলো গ্র্যান্ড জামে মসজিদ। এটি পাকিস্তানের করাচিতে অবস্থিত। এই মসজিদের আয়তন ২ লাখ বর্গমিটার। এই মসজিদের ধারণক্ষমতা সাড়ে ৯ লাখ। গ্র্যান্ড জামে মসজিদের নকশায় প্রাধান্য পেয়েছে মুঘল, আরব, পারস্য ও তুর্কি স্থাপত্য। এতে আছে একটি ৩২৫ ফুট উঁচু মিনার ও ১৫০টি গম্বুজ। চারপাশে আছে বড় বড় বাগান ও তোরণশোভিত দেয়াল। অনেক দূর থেকেও যাতে দেখা যায়, এজন্য ৬০ ফুট উঁচু একটি পাহাড়ের চূড়ায় তৈরি হয়েছে মসজিদটি। স্থাপনার কাজে ব্যবহৃত হয় বেলুচিস্তানের ধূসররঙা মার্বেল পাথর।


>> ইমাম রেজার মাজার:

ইরানের মাশহাদে অবস্থিত ইমাম রেজার মাজার শরীফের ধারণক্ষমতা ৭ লাখ। প্রতিষ্ঠাকাল ৭২৯ খ্রিষ্টাব্দ। ইমাম রেজার মাজারসহ এই মসজিদে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা রয়েছে। যেমন—ঘোহারশাদ মসজিদ, একটি জাদুঘর, পাঠাগার, চারটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, একটি সমাধিক্ষেত্র, জিয়ারতকারীদের জন্য খাবারঘর ও সালাত আদায়ের জন্য বিশাল কক্ষ। পর্যটকদের কাছে এই মসজিদটি জনপ্রিয় বলে এটি ‘ইরানি শিয়াদের প্রাণ’ নামে পরিচিতি লাভ করেছে।


>> ফয়সাল মসজিদ:

পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদে অবস্থিত ফয়সাল মসজিদ পৃথিবীর অন্যতম বৃহত্তম মসজিদ। ১ লাখ ৩০ হাজার বর্গমিটার এই মসজিদের ধারণক্ষমতা ৩ লাখ মানুষ। মসজিদটি স্থাপিত হয়েছিল ১৯৮৬ সালে। বর্তমানে এটি পাকিস্তানে পর্যটকদের মধ্যে সুপরিচিত একটি আধুনিক ইসলামি স্থাপনা। বেদুইন তাঁবুর আদলে গম্বুজবিহীন এই মসজিদের নকশা করেছেন তুর্কি স্থপতি ভেদাত ডালোকে। সৌদি আরবের রাজা ফয়সাল বিন আবদুল আজিজ মসজিদটি নির্মাণের জন্য ২৮ মিলিয়ন ডলার দিয়েছিলেন। পরে তাঁর নামেই মসজিদটির নামকরণ করা হয়। এটি দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে বড় মসজিদ বলে গণ্য করা হয়। 

সূত্র: দ্য টেলিগ্রাফ, এনসাইক্লোপিডিয়া ব্রিটানিকা, আরকিটেকচারাল টাইমস

আরো পড়ুন: মুসলিম সমাজে মসজিদের ভূমিকা

এম এইচ ডি/ আই. কে. জে/

ধর্ম মসজিদ

খবরটি শেয়ার করুন